ফেসবুকের ৫টি দরকারি সেটিংস যা আপনার অবশ্যই জানা প্রয়োজন।

আজকের ব্লগে আমি আপনাদের সাথে ফেসবুকের পাঁচটি খুবই দরকারি এবং গুরুত্বপূর্ণ সেটিং নিয়ে কথা বলব যে সেটিং গুলো সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। আপনারা সবাই হয়ত জানেন ফেসবুক কিন্তু দিন দিন অনেক গ্রো করছে অনেক নতুন নতুন অপশন তারা এড করছে আনাচে-কানাচে এখানে সেখানে অনেক সেটিং তারা এড করে রেখেছে, সেগুলো সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না। 

5 Useful Facebook settings you must know

এই সেটিংসগুলো জানলে আমাদের ফেসবুক ইউজার এক্সপেরিয়েন্স কিন্তু আরো অনেক বেটার হয়ে যাবে এবং আমরা নিজেদের মতো করে প্ল্যাটফর্মটাকে কাস্টমাইজ করে নিতে পারব এবং আরো সেইফ এন্ড সিকিউর করে নিতে পারব। তো আমরা এই সেটিং গুলো নিয়ে পরবর্তীতে সিরিজ আকারে ব্লগ বানানোর চেষ্টা করব আজকের ব্লগে ৫টি দরকারি সেটিংস জানাবো এবং পরবর্তীতে আস্তে আস্তে আরও আসবে।

        1. SEE FIRST / FAVORITE

আজকে ৫টা সেটিংস এর মধ্যে যে প্রথম সেটিংস টা আছে সেটা নিয়ে কথা বলি প্রথম সেটিং টা হচ্ছে SEE FIRST বা FAVORITE। আগে এইটার নাম ছিল SEE FIRST কিন্তু এখন এইটার নাম হয়েছে FAVORITE। এই অপশনটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ, একটা জিনিস খেয়াল করবেন আমরা প্রায় সবাই কিন্তু ফেইসবুকে প্রচুর সময় নষ্ট করি শুধু শুধু ভাইরাল টপিক, কোন ফ্রেন্ড কোথায় ঘুরতে গেলে, কে কি খাচ্ছে, কে কি করতেছে ইত্যাদি সব অদরকারী জিনিসপত্র দিয়ে। সারাদিন এইগুলো আমাদের ফেইসবুকে ভরা থাকে যেকারণে আমরা সারাদিন ফেসবুকে স্ক্রল করতে থাকি। কেউ বেশী সময় স্পেন্ড করে আবার কেউ কম সময় স্পেন্ড করে। কিন্তু এই সময়টা যদি আমরা কোন ভ্যালুয়েবল কাজে বা কোন প্রডাক্টিভ কাজে ব্যয় করি যেটা করলে আমাদের লাইফে একচুয়ালি উপকার হবে কিংবা আমরা যদি এমন কোনো কাজে ব্যয় করি যাতে আমাদের স্কিল ডেভেলপমেন্ট হয় কিংবা এটলিস্ট আমরা উল্টাপাল্টা চিন্তা থেকে একটু দূরে থাকি এবং ভালোর দিকে চিন্তা করি এরকম যদি ফেসবুকের মাধ্যমে করা যায় তাহলে কিন্তু ব্যাপারটা খারাপ হয় না। সো এই যে ভাইরাল টপিক কে কোথায় ঘুরতে গেলে, কে কি খাইতে গেল বা আজাইরা জিনিস গুলো যেগুলো আমাদের লাইফে কোন ভ্যালু ক্যারি করে না সেই জিনিস গুলো কে এভয়েড করে মিনিংফুল জিনিসগুলোকে যদি আপনি আপনার ফেইসবুকের নিউজফিডে রাখতে চান তাহলে যেটা করতে পারেন …

আপনার পছন্দের পেইজ এবং পছন্দের মানুষ গুলোকে ফেভারিট লিস্টে অ্যাড করে রাখতে পারেন। এতে করে সেই মানুষগুলো কিংবা সেই পেজটা যখন কোন কিছু পোস্ট করবে সেটা আপনার নিউজ ফিড এর একদমই উপরের দিকে থাকবে আননেসেসারি জিনিসগুলো আপনার সামনে আসবে না এটা করার জন্য যে কোন পেইজে ঢুকবেন যেই পেইজে আপনি লাইক দিয়েছেন বা ফলো করছেন সে পেজে ঢুকার পর ফলোইং যে অপশনটা আছে সেখানে ক্লিক করবেন এরপর দেখবেন ফেভারিট নামের একটা অপশন আছে যেটা সিলেক্ট করে দিবেন। আর যদি কোন ফ্রেন্ড কে ফেভারিট বানাতে চান তাহলে তার প্রোফাইলে যাবেন তারপরে ফ্রেন্ড যেখানে লেখা আছে সেখানে ক্লিক করবেন করার পরে ফেভারিট এর অপশন টা আছে সেটা সিলেক্ট করে দেবেন। আপনি এটা করতে পারেন বিভিন্ন রকমের পেইজ কিংবা প্রোফাইলে। 

 
Facebook settings SEE FIRST / FAVORITE
ধরুন কোন একজন মানুষ আপনাকে খুব ইন্সপায়ার করে, তার কাজ আপনাকে ইন্সপায়ার করে, সে তার বিভিন্ন এচিবমেন্ট নিয়ে পোস্ট করে তার কাজগুলো নিয়ে পোস্ট করে, আপনি তাকে ফেভারিট করে রাখতে পারেন এতে করে তার কাজ গুলো দেখে আপনি ইন্সপায়ার হলেন। এমন অনেক পেইজ আছে যেগুলো স্কিল ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কথা বলে, ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলে, পড়াশোনা নিয়ে কথা বলে কিংবা মজায় মজায় আপনাকে অনেক কিছু শেখাতে পছন্দ করে অথবা আপনার ইচ্ছাগুলো যেমন- আপনি যদি ট্রাভেলিং করতে খুব পছন্দ করেন, তাহলে আপনি ট্রাভেল রিলেটেড পেইজ গুলো ফলো করতে পারেন আপনার যদি খেলাধুলা পছন্দ হয় খেলাধুলা রিলেটেড পেইজগুলোকে আপনার ফেভারিটে এড করে রাখতে পারেন। এমন না যে আপনাকে শুধু পড়াশোনা বা ক্যারিয়ার এই জিনিসগুলো নিয়ে করতে হবে, কিন্তু আসলে যেই জিনিসগুলো আপনাকে মোটিভেট করে, যেই জিনিসগুলো আপনাকে ইন্সপায়ার করে বা প্রোডাক্টিভ কাজে আপনাকে ধাবিত করে সেই জিনিসগুলোকে আপনার ফেভারিট লিস্টে অ্যাড করে রাখতে পারেন।

কোনটা এড করবেন সেটা অবশ্যই আপনার উপর ডিপেন্ড করে, কিন্ত আমরা রিকমান্ড করব বেশ কিছু মোটিভেট এবং ভালো পেইজ এবং প্রোফাইল আপনার ফেভারিটে অ্যাড করে রাখবেন এতে করে আননেসেসারি জিনিসগুলো না এসে, নেসেসারি জিনিসগুলো আপনার সামনে আসবে। তবে আপনি কাকে আপনার ফেভারিট লিস্টে এড করেছেন সেটা জানতে হলে আগে আপনার ফেসবুকে সেটিংসে যাবেন যাওয়ার পরে প্রেফারেন্স এর আন্ডারে দেখবেন নিউজ ফিড নামে একটা অপশন আছে সেখানে গেলেই ফেভারিট এর আরএকটা অপশন আছে যেটার আন্ডারে আপনি কাকে কাকে ফেভারিট হিসেবে অ্যাড করেছেন তাদের নাম চলে আসবে আপনি চাইলেই সেখান থেকে তাদেরকে রিমুভ করতে পারেন বা নতুন কাউকে এডও করতে পারেন।

        2. SAVE ITEMS

সেকেন্ড সেটিংসটা একদমই সহজ এবং স্পষ্ট কিন্তু আমরা অনেকেই আছি এটা ইউজ করি না সেটা হচ্ছে ফেসবুকের কোনো কন্টাক্ট সেভ করে রাখা (SAVE ITEMS)। অনেকেই খেয়াল করবেন স্ক্রিনশট নেয় ভিডিও ডাউনলোড করার চেষ্টা করে কারণ তাদের পরবর্তীতে টা দরকার হতে পারে সেজন্য। আপনি চাইলেই কিন্তু ফেসবুকের প্ল্যাটফর্মের ভেতরেই সেই পোস্টগুলোকে সেভ করে রাখতে পারেন সেজন্য জাস্ট যে কোন পোষ্টের উপরে যে তিনটা ডট থাকে সেখানে প্রেস করবেন পোস্ট হলে দেখবেন সেইভ পোস্ট, ভিডিও হলে সেইভ ভিডিও এবং আপনি যদি অপশনস এ যান ফেসবুকের তাহলে সেখানে দেখবেন SAVED নামের একটা অপশন আছে যেখান থেকে আপনার সেভ করা কন্টাক্ট গুলো দেখতে পারবেন। 



সেই সাথে আরেকটা জিনিস এ্যাড করতে চাই সেটা হচ্ছে অনেকেই আছে কোন পোস্ট এর নোটিফিকেশন পাওয়ার জন্য সেই পোস্টের নিচে F লিখে কমেন্ট করে পরবর্তীতে সেই পোস্টের আপডেটগুলো সে পায়। এইটারও কিন্তু একটা অপশন আছে, আপনি যেই পোস্টের পরবর্তীতে আপডেট পেতে চান সেই পোস্টের থ্রি ডটে ক্লিক করেন তাহলে দেখবেন Turn on notification নামে একটা অপশন আছে এটাকে ক্লিক করে রাখবেন, এতে কি হবে কেউ যদি এই পোস্টে যেই কমেন্ট করবে আপনার কাছে একটা নোটিফিকেশান যাবে। তাই আমি মনে করি কমেন্টে F লিখে কমেন্ট না করে এই অপশনটা ইউজ করলে আপনাদের জন্য ভালো হবে।
 

        3. Open Link Externally

          ৩ নাম্বার অপশন টা হচ্ছে ফেইসবুক থেকে লিংক এক্সটার্নালি ওপেন করার। একটা জিনিস আমাকে খুবই বিরক্ত করে সেটা হচ্ছে, ফেইসবুকের অ্যাপে যখন আমি কোন লিংক ওপেন করতে চাই কোন পোস্ট থেকে সেটা অন্য কোন ব্রাউজারে যায় না ফেইসবুকের অ্যাপের নিজস্ব যে ব্রাউজার আছে সেটাতে ওপেন হয়ে যায়। ফেইসবুকের ব্রাউজারে অনেকগুলো লিমিটেশন আছে, যেমন মনে করেন আপনি যদি এই ব্রাউজারে ডেক্সটপ ভিউ অন করতে চান তাহলে এখান থেকে করতে পারবেন না। তো গুগল ক্রোমে যদি এটা ওপেন হতো তাহলে খুব ইজিলি করতে পারতেন। কিন্তু এখন আপনাকে কি করতে হয় প্রথমে লিংক কপি করতে হয় তারপরে গুগল ক্রোমে পেস্ট করতে হয়, তারপর সেই সাইটে ভিজিট করতে হয়।

এই প্যারাটা যদি না নিতে চান তাহলে আপনারা ফেসবুকে সেটিংসে যাবেন যাওয়ার পরে দেখবেন মিডিয়া নামের একটা অপশন আছে সেটিংস থেকে একদমই নিচে বা লাস্ট অপশন টা দেখবেন লিংক ওপেন এক্সটার্নালি এই অপশনটাতে টিক চিহ্ন দিয়ে দিবেন। তাহলে যতবারই আপনি ফেসবুকের অ্যাপ এ কোন লিংক ওপেন করবেন সেটা সরাসরি আপনার পছন্দের ব্রাউজার দিয়ে ওপেন হবে।
 

        4. DATA SAVE

চার নাম্বার সেটিংসে দুইটা অপশন আছে, একটা হচ্ছে DATA SAVE করা আর একটা হচ্ছে MUTE VIDEO সাউন্ড ছাড়া ভিডিও প্লে করা । আমি একটা এক্সাম্পল দেই, একদিন আমি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যক্তির সাথে মিটিং করতে গেলাম সে আমাকে তার রুমে নিয়ে বলল যে ভাই একটু বসেন আমি আরেকটা কাজ করি, তো উনি আরেকজনের সাথে একটা মিটিং করছেন আমি বসে বসে বোর হচ্ছিলাম যেকারনে ফোনে আমি জাস্ট ফেইসবুক স্ক্রল করছিলাম হঠাৎ করে একটা ভিডিও অনেক জোরে শব্দ করে প্লে হয়ে গেল এবং ফোনে ফুল সাউন্ড দেওয়া ছিল যার ফলে এরকম একটা বিকট শব্দ হয়েছে তখন আমি খুবই বাজে একটা সিচুয়েশনে পড়ে গিয়েছে এরকম সিচুয়েশনে যদি না পড়তে চান তাহলে সেটিংস থেকে মিডিয়ার আন্ডারে দেখবেন স্টার্ট ভিডিও উইথ সাউন্ড নামের অপশন আছে যেটাকে অফ করে দেবেন এরপর যখনই আপনি ফেসবুক স্ক্রল করবেন ভিডিও প্লে হবে কিন্তু সাউন্ড আসবে না যদি আপনি ইচ্ছে করে আনমিউট না করেন ততক্ষণ পর্যন্ত কিন্তু সাউন্ড প্লে হবে না।
এটা অনেক সেইফ এবং আমার মনে হয় এরকম কোন সিচুয়েশন থেকে আপনারা বাঁচতে পারবেন। আর একটা অপশন আছে ডেটা সেইফ করার সেটা যদি অন করে দেন তাহলে অটোমেটিক যে ভিডিওগুলো প্লে হবে সেটা একটু লো রেজুলেশনে প্লে হবে এতে করে আপনি যদি মোবাইল ডাটা ইউজ করেন তাহলে আপনার ডেটা অনেকখানি সেভ হতে পারে। তো এই দুইটা অপশন আই থিঙ্ক অনেকেরই কাজে লাগবে।

        5. Turn off email notification

        ৫ নাম্বার এবং শেষ সেটিংসটা হচ্ছে ইমেইল নোটিফিকেশন বন্ধ করা। আপনারা সবাই একটা জিনিস খেয়াল করবেন যে আমরা যেই ইমেইল এডড্রেস টা দিয়ে ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট খুলি সেই ইমেইল এড্রেস টা তে ঢোকা যায়না ওরে ভাই এত পরিমাণে মেইল ফেসবুক থেকে যায়, যার ফলে অনেক সময় দরকারি মেইল হারাইয়া যায়। অনেকেই আছে যারা ফেইসবুকের একাউন্ড তৈরি করা মেইল সব সময় ইউজ করে না, কিন্তু আপনার যদি প্রাইমারী ইমেইল হয়ে থাকে তখন ব্যবহার করার সময় দেখা যায় আপনার ইনবক্স ফুল হয়ে যায় ফেসবুকের ইমেইল। আসলে এই ইমেইল নটিফিকেশনটার দরকার পড়ে না, কারণ আমরা কেউই ফেইসবুকে আমাকে কে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠালো তা ইমেইল থেকে জানিনা। সরাসরি ফেইসবুকে গিয়েই জানি, তাহলে কেউ আমাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠালে ইমেইল নটিফিকেশন যায় ব্যাপারটা কিন্তু আসলে খুব একটা দরকার না আমাদের। এটা অফ করার জন্য আপনারা ফেসবুকে সেটিংসে যাবেন যাওয়ার পরে নোটিফিকেশনস নামে একটা অপশন আছে সেখানে যাবেন এবং সেখান থেকে একদম নিচের দিকে ইমেইল নামের অপশন আছে,
সেখানে ইমেল ফ্রিকোয়েন্সি নামের যে অপশনটা আছে সেটাতে টাচ করবেন টাচ করার পরে দেখবেন তিনটা অপশন আসে এখান থেকে একদম লাস্ট এর অপশনটা অনলি এবাউট ইওর একাউন্টে এইটা সিলেক্ট করে দিবেন। তাহলে আর পরবর্তীতে শুধুমাত্র আপনার অ্যাকাউন্টের সিকিউরিটি রিলেটেড কিংবা খুব ইম্পর্টেন্ট যে মেইল গুলো আছে সেগুলো পাঠাবে কে আপনাকে ম্যাসেজ পাঠাইলো কে কমেন্ট করলো কে আপনাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাইলো এগুলো সব নোটিফিকেশন ইমেইল আপনাকে পাঠাবে না । এতে করে আপনার মেইলটা একটু ক্লিন ও পরিষ্কার থাকবে এবং পরবর্তীতে মেইলটা যদি আপনি ইউজ করতে চান তাহলে খুব স্বাচ্ছন্দে ইউজ করতে পারবেন।

তো এই ছিল ফেসবুকের পাঁচটি খুবই দরকারি সেটিংস আমরা মনে করি এই পাঁচটা থেকে অন্তত একটা হলেও আপনাদের কাজে লাগবে আর যদি একটা সেটিং আপনার কাজে লাগে তাহলে প্লিজ আমাদের ব্লগটি শেয়ার করুন আপনার বন্ধুদের সাথে যেন তারা ওই সেটিং গুলো সম্পর্কে জানতে পারে ফিউচারে এরকম আরো সেটিংস নিয়ে আমরা ব্লগ করব আপনি যদি আমাদের পেজটা ফলো না করে থাকেন তাহলে ফলো করে দিন এবং আমাদের সাথেই থাকুন।